দৈনিক শিক্ষা নিউজ প্রতিবেদক : ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার শ্রেণি শিক্ষককে বদলি করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শাখাপ্রধানকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন তারা। লিখিতভাবে বদলির আদেশ বাতিল না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
আন্দোলনরত অভিভাবকরা বলছেন, বসুন্ধরা ব্র্যাঞ্চের ‘দিবা শাখা’র শিক্ষক আবু সুফিয়ান ইংরেজি বিষয়ের ক্লাস নেন। তিনি একজন দক্ষ ও ভালো শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের অনেক যত্নসহকারে পড়ান। শিক্ষার্থীরাও তাকে অনেক পছন্দ করে।
“গত মাসেও গণিতের বিশ্বজিৎ স্যারকে মূল শাখায় বদলি করে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাল শিক্ষকদের এভাবে সরিয়ে নিলে আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার কী হবে? সেই প্রতিবাদেই অভিভাবকরা আন্দোলন করছে।”
আরেকজন অভিভাবক বলেন, “আমরা আমাদের শাখা প্রধানকে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বললাম। উনি বললেন, উনি এ বিষয়ে জানেন না। উনি না জানলে বদলি হল কিভাবে? এভাবে চলতে থাকলে বাচ্চাদের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাবে।”
তাদের অভিযোগ, দিবা শাখার প্রধান জগদীস পালের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে তাকে ক্লাসে যেতে দেওয়া হয়নি। নিজের ক্ষোভ থেকে তুচ্ছ কারণে এ শিক্ষককে বদলি করে ভিকারুননিসার আজিমপুর ব্র্যাঞ্চে পাঠানো হয়েছে। শাখাপ্রধানের ইচ্ছায় তাকে বদলি করা হয়েছে।’
জানা গেছে, শিক্ষক আবু সুফিয়ানের বদলির আদেশ বাতিল করে তাকে বসুন্ধরা ব্র্যাঞ্চে রাখতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা স্কুলে জড়ো হয়ে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শাখাপ্রধানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। ঘণ্টাখানেক পর খুলে দেওয়া হলেও জগদীস পালকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
শিক্ষক সুফিয়ানের বদলির আদেশ বাতিল করা হয়েছে- এমন ঘোষণা শাখাপ্রধানের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে দেওয়া হলেও আন্দোলনকারীরা তাতে আস্থা রাখতে পারছেন না। লিখিতভাবে এ সিদ্ধান্ত দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। তারা ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে বসুন্ধরার শাখাপ্রধান জগদীস পাল গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আবু সুফিয়ানের বদলির বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। কয়েকদিন আগে তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাকে বেইলি রোডে মূল ব্র্যাঞ্চে অধ্যক্ষ আপা ডেকেছেন বলে জানান। আমি তাকে যেতে বলেছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর তাকে আজিমপুর ব্র্যাঞ্চে বদলি করা হয়। তিনি আমাকে সেই বিষয়টি জানান। মূল ব্র্যাঞ্চ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হলে তা মেনে নিতে হবে, সেটি আমি তাকে জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আজ সকালে হঠাৎ অভিভাবকরা এসে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে আসে। তারা বিক্ষোভ শুরু করে। কেন ওই শিক্ষককে বদলি করেছি, তা জানতে চাওয়া হয়। বিষয়টি আমি কিছুই জানি না বলে তাদের বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তবুও তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।’
জগদীস পাল আরও বলেন, ‘সকাল থেকে আমাকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর আবু সুফিয়ানের বদলির আদেশ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের জানালেও তারা তা মানছেন না। এ বিষয়ে লিখিত চাওয়া হচ্ছে। সেটি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’
জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
Leave a Reply