গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের পর ইসরাইলি প্রতিনিধি দলের যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মূলত জাতিসংঘে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দেওয়ার জেরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাসের পর সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে তার দেশের শীর্ষ একটি প্রতিনিধি দলের আনুষ্ঠানিক সফর বাতিল করেছেন।
এর আগে সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইসলামের পবিত্র মাস রমজানে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে একটি প্রস্তাব পাস করে। পবিত্র এই মাসটি মধ্যপ্রাচ্যে গত ১১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এবং আগামী ৯ এপ্রিল শেষ হতে পারে।
ইসরাইলের পাবলিক ব্রডকাস্টার কান (KAN)-এর মতে, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পর নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনে ইসরাইলি প্রতিনিধি দলের সফর বাতিল করেন।
নেতানিয়াহুর কার্যালয়য় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রেজুলেশন পাসের অনুমতি দেওয়ার মার্কিন এই সিদ্ধান্ত ‘যুদ্ধের শুরু থেকে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক অবস্থান থেকে স্পষ্ট পশ্চাদপসরণ।’
অবশ্য ওয়াশিংটন জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভেটো দিতে ব্যর্থ হলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এর আগেই প্রতিনিধিদলের সফর বাতিল করার হুমকি দিয়েছিলেন।
গাজায় সম্প্রসারিত মানবিক সহায়তার জন্য মার্কিন প্রস্তাবের পাশাপাশি দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে ইসরাইলের পরিকল্পিত স্থল হামলার বিষয়ে বিকল্পগুলো শুনতে ইসরাইলি এই প্রতিনিধিদলের ওয়াশিংটন সফর করার কথা ছিল।
গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে ফোনালাপের পর এই সফরের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি পাস হয়। ওই প্রস্তাবে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং আটক সব জিম্মির মুক্তির দাবি তোলা হয়।
গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। রাফাহ শহরটি এখন ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের জন্য তুলনামূলকভাবে শেষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেখানে হামলা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। তাই নেতানিয়াহুকে সেখানে স্থল হামলার বিকল্প উপায় বিবেচনার জন্য একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সেই বৈঠক স্থগিত করেছে দেশটি। যার মনে রাফাহতে হামলা ঠেকানোর মার্কিন প্রচেষ্টার পথে একটি বড় নতুন বাধা সৃষ্টি হওয়া।
রাফাহতে আক্রমণের হুমকি দীর্ঘদিনের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। একইসঙ্গে নেতানিয়াহু যদি বাইডেনের কথা না রাখেন এবং যেভাবেই হোক রাফায় হামলা চালানোর জন্য এগিয়ে যান তবে ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক সহায়তা সীমিত করতে পারে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Leave a Reply