জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লা সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে সরকার। কয়লাভিত্তিক দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ। আর্থিক, আইনি ও কারিগরি সমস্যার কারণেও উৎপাদন বন্ধ আছে। ফলে সারা দেশে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে বাসাবাড়িতে দুর্ভোগের পাশাপাশি কল কারখানাতেও পড়ছে বিরূপ প্রভাব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুনরায় উৎপাদনে ফিরতে ডিসেম্বর লাগতে পারে।
দেশের সাতটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ৭ হাজার ৯৯ মেগাওয়াট। তবে উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক ৩ হাজার ১৯৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এরমধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে দেশের উৎপাদিত কয়লা দিয়ে। পর্যাপ্ত কয়লা উত্তোলন করতে না পারায় প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে এই কেন্দ্রের দুটি ইউনিট। বাকি ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চলে আমদানি করা কয়লা দিয়ে। আমদানির ডলার জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছে পিডিবি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বকেয়া বিল, ডলার-সংকট, দরপত্র জটিলতায় সময় মতো কয়লা আমদানী করতে না পারায় কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রায়ই বন্ধ থাকতো। সেই ধারা থেকে এখনো বেড়িয়ে আসতে পারেনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়। কয়লা সংকটের কারণে গত ৩১শে অক্টোবর থেকে পুরোপুরি বন্ধ আছে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২৭শে অক্টোবর বরগুনার তালতলীতে ৩০৭ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বন্ধ। বাগেরহাটের রামপাল ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে কয়লার অভাবে। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেড এর প্রধান প্রকৌশলী মুহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে যেতে আরো একমাস সময় লাগবে।
বিদ্যুৎ খাতের বিশ্লেষক শামসুল আলম মনে করেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া উচিত ছিলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের।
এখন দৈনিক বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৩ হাজার মেগাওয়াট। কয়লা থেকে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাড়তি খরচে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাড়তি উৎপাদনের চেষ্টা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারপরও সারাদেশে প্রতিদিন ঘন্টায় ৭০০ থেকে ১০০০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম সরবরাহ হচ্ছে।
Leave a Reply