এম.সালাম ঃ বর্তমান সময়ে আধুনিক বাংলা গানের ধারা দেখে আমাদের পুরনো দিনের গান ও গানের মানুষগুলোর কথা মনে পড়ে। পুরনো সেই গানের আবেদন এখনো রয়ে গেছে। কিন্তু পুরনোগুলোকে নিয়ে বহু আগেই চলছে রমরমা ব্যবসা। রিমেক্স, রিমিক করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে।
এতে আউটপুট
যে হচ্ছে সে অদ্ভুধ ধরনের। ৬০ দশকের কিংবা ৭০ দশকের গানগুলোর মতো এখনকার গানে প্রাণ নেই বললেই অভ্যাক্তি হবে না। তখনকার গানে প্রাণ ছিল, ম্যালোডির ছোঁয়া ছিল। গানের শব্দ চয়ন থেকে কম্পোজিশন ছিল ভিন্ন ধরনের। আর এখনকার গানের ধারা সব পাল্টে গেছে বললেই চলে।
গানের কথা এবং সুরের সাথে কোনো সামাঞ্জস্য নেই। কথা ও সুর যেনতেন ভাবে জোড়া
লাগিয়ে সুরকার বা শিল্পীর গলায় তুলে দেওয়া হয়। ফলে দেখা যায় দুই তিনদিন মাত্র গান গুলো বেঁচে থাকে, মানুষ আর মনে রাখতে পারেনা। অথচ এক সময়কার গানগুলো এখনো সজীব, শ্রোতাদের হৃদয়ে দাগ কাঁটে।
যা হোক মিডিয়া অঙ্গনে তারুন্যে ছোঁয়া আর নতুনদের মাঝে এক সম্ভবনাময় প্রতিভাধর
সংগীত শিল্পী নাসরীন দেওয়ান। চমৎকার বাচন ভঙ্গীতে আধুনিকতা এবং কোমলতা তাঁকে
ছুঁয়ে আছে নিভীরভাবে। সব মিলিয়ে এ প্রজন্ম্যের এক স্বপ্নীল প্রতিভা নাসরীন দেওয়ান।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসরীন দেওয়ান বলেন, আমি সংগীতের মধ্যে দিয়ে শোবিজ অঙ্গনের স্বর্ণশিখরে পৌছাতে চাই। অদম্য ইচ্ছা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একদিন সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন বলে তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন।
ছোট বেলা থেকেই মনের মাঝে পুষে আসছিলেন একজন সংগীত শিল্পী হবার। সেই লালিত স্বপ্ন ধীরে ধীরে পুরোন হবার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এতে নাসরীন দেওয়ান খুবই খুশি। তিনি জীবনকে দেখেন আনন্দের দৃষ্টিতে, ভালোবাসার দৃষ্টিতে।
সহজ, সরল মনের অধীকারীনী নাসরীন কোন গন্ডীর মধ্যে বন্দি থাকতে চান না। মুক্ত বিহঙ্গের মতো উঁড়ে বেঁড়াতে চান বিশ্বময়। খুব ছোট বেলা থেকে গান করেন নাসরীন দেওয়ান। তার বাবা মোঃ আব্দুল করিম দেওয়ান এর হাতেই গানে হাতে খড়ি নেন।
তাঁর বাবা মোঃ আব্দুল করিম দেওয়ান বাউল গান করতেন, গান লিখতেন এবং তিনি একজন সে সময়কারের গীতিকার ও গল্প লেখকও ছিলেন। নাসরীন দেওয়ান দ্বিতীয়ত গান শিখেছেন আনোয়ার হোসেন আনু নামের একজন ওস্তাদ এর কাছে। পরে ওস্তাদ মাহবুবুল ইসলাম এর কাছে আধুনিক গানের তালিম নিয়েছেন।
এরপর ময়মনসিংহ এর ওস্তাদ হারুনুর রশিদ এর কাছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গানের তালিম নেন এবং ময়মনসিংহ শিল্পকলা একাডেমীতে ক্লাসিকেল এর উপরে প্রশিক্ষণ করেন। নাসরিন দেওয়ানের গ্রামের বাড়ী সাঁটুরিয়া, মানিকগঞ্জ। বাবা মোঃ আব্দুল
করিম দেওয়ান অনেক আগইে প্রয়াত হয়েছেন এবং মা ছিলেন একজন সফল গৃহিনী।
তিনি ভাই,তিন বোনদের মধ্যে নাসরীন পঞ্চম। তিনি গত ১৮/০৭/২০২৩ ইং তারিখে বাংলাদেশ টেলিভিন রিপোর্টার্স এ্যাসোসিশেন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব) থেকে শ্রেষ্ঠ সংগীত শিল্পী হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন।
ট্র্যাব এ আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী জনাব কে. এম. খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব মনোজ সেনগুপ্ত। পুরষ্কার পেয়ে নাসরীন দেওয়ানের অনুভুতির কথা জানতে চাইলে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। প্রথমেই তাঁর
বাবাকে স্মরন করছেন।
তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল একদিন তার মেয়ে অনেক বড় হবেন এবং অনেক সম্মানীত হবেন। কিন্তু সেটা সে আর দেখে যেতে পারেননি। নাসরীন দেওয়ান শিল্পীকলা
একাডেমী ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকা ভুক্ত হবার জন্য অডিশন দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন।
সে কারণে সকল দর্শক শ্রোতা, কলাকৌশুলী, সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করেছেন। নাসরীন আধুনিক ফোক, লালন, সবধরনের গানেই তিনি গাইতে স্বাতছন্দবোদ করেন।পরিবারের অনুপেরনায় নাসরীন এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে।
তাঁর স্বপ্ন সে এই দেশে একজন প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পী হবেন। সাম্প্রতিক সময়ে নাসরীন দেওয়ান দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে মঞ্চে গান করে বেশ সারা জাগিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু কালচারার ফাউন্ডশন এর একজন সদস্য ও নিয়মিত কণ্ঠ শিল্পী। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংগীতের মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই, এটাই আমার স্বপ্ন, এটাই আমার ধ্যান। সারা পৃথিবীর বাংলা গানের দর্শক শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থান করে নিতে চাই, পাশাপাশি দর্শক শ্রোতাদের ভালোবাসাও চাই।
অবসর সময়ে নাসরীন নিয়মিত গানের চার্চ করেন, বই পড়েন ও টেলিভিশন দেখেন। বিকেলে সোনালী রোদ তার পছন্দ, সাবিনা ইয়াসমিন ও রুনা লায়লার গান তার সবচাইতে প্রিয়। এই মুহুর্তে গান ছাড়া আর কিছুই ভাবতে চান না নাসরীন দেওয়ান।
Leave a Reply