ছাত্রদলের ৬ নেতাকে প্রথমে তুলে নিয়ে গুম করা এবং পরবর্তীতে অস্ত্র হাতে ধরিয়ে মামলা দিয়ে ২ জনকে দিনের পর দিন রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ২০টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ২০ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বুধবার (২৩ আগষ্ট) এক বিবৃতিতে বলা হয়, দিনের পর পর দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করার অভিযোগ বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে রয়েছে। এই ২০ সংস্থা মনে করে দুই ছাত্রনেতাকেও তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করতেই রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশনা উল্লেখ করে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবীকে সামনে উপস্থিত রাখতে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম অনুসরণ করার জন্য সুপ্রিমকোর্ট এই সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিল, সেগুলো ডিবি ও পুলিশ মানছে না। সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাদের সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই ঘটনা ছাত্রদল নেতা জিসান এবংআরিফ বিল্লাহ’র ক্ষেত্রে ঘটছে।
বিবৃতিতে ২০টি মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইতোমধ্যে র্যাবের ঊর্ধ্বতন ৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমেরিকা। এর মাধ্যমে প্রমাণিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলো অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। ৬ ছাত্র নেতাকে তুলে নিয়ে ৩০ঘন্টা ধরে অস্বীকার করে বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ডিবি। পরবর্তীতে একতরফা তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উদ্ধারের কাহিনী প্রচার করে তাদেরকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। এই একতরফা প্রচারণা চালিয়ে সামাজিকভাবে তাদের সম্মানহানি ঘটানো আইনের লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রচলিত আইন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ৩০ ঘন্টা গুম করে রাখা এবংঅস্ত্র উদ্ধারের এক তরফা বর্ণনা মানবাধিকারের পরিপন্থি।
বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে রিমাণ্ড বাতিল করে তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবী জানিয়েছে।
বিবৃতিদাতা সংস্থাগুলো হচ্ছে– সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকে, সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস(এসডিআর), নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-ইউ কে, ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যানিটি ক্লাব ইউরো বিডি, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোরাম, অনলাইন এক্টিভিস্ট ফোরাম ইউকে, সলিডারিটি ফর হিউম্যান রাইটস ইউকে, রাইটস কনসার্ন, রাইটস মুভমেন্ট ইউকে, স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ, পিস ফর বাংলাদেশ, সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি এন্ড গুড গভর্নেন্স, সাপোর্ট লাইফ ইউকে, ইউনিভার্সাল ভয়েস ফর জাস্টিস, ভয়েস ফর জাস্টিস এন্ড রাইট, ভয়েস ফর জাস্টিস অ্যান্ড হোয়াইট পিজিয়ন, ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই) এবং ইউনিভার্সাল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইট।
Leave a Reply