একটানা পাঁচ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের জুনিয়র সেকশন অফিসার আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুর বেতনভাতা বন্ধ করা হয়েছে।
ওয়াহেদ খান টিটু রুয়েটের কর্মকর্তা পদের বেতনভাতা নিয়মিত উত্তোলন করলেও কাজ করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) হিসেবে নগরভবনে।
এদিকে সম্প্রতি বিষয়টি রুয়েট কর্তৃপক্ষের নজরে এলে টিটুকে শোকজ করা হয়।
গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত রুয়েট ফাইন্যান্স কমিটির সভায় আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুর বেতনভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী জানান, ওয়াহেদ খান টিটু ছাড়াও আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি চিহ্নিত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে টিটুর বেতনভাতা বন্ধ করা হয়েছে। আগামী সিন্ডিকেট সভায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রুয়েট সূত্রে জানা যায়, টিটু ২০০৪ সালে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। ২০১৩ সালে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই রাজনৈতিক সুপারিশে রুয়েটে চাকরি হয় টিটুর। চাকরি লাভের পর থেকেই টিটু অফিসে অনিয়মিত। ২০১৮ সালের জুনের পর থেকে ২০২৩ সালের অদ্যাবধি কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। অফিস না করলেও টিটু চাকরিতে নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন। নিয়েছেন বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর)।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, টিটু মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। অধিকাংশ সম্পদ ও ব্যাংক জমার অর্থ কৌশলে মা ও বোনসহ আত্মীয়-পরিজনের নামে রেখেছেন। মেয়র ঘনিষ্ঠ হওয়ায় টিটু একচ্ছত্র প্রভাব খাটিয়ে রাসিকের অনেক কর্মকাণ্ড নিজে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। নগরীতে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বলয়। আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন চক্রকে টিটু পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে। জামায়াত-বিএনপি পরিবারের অনেককে চাকরি দিয়েছেন রাসিকে। এতে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ রয়েছে। যদিও টিটু এ সকল অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
রুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আরিফ আহম্মেদ চৌধুরী আরও বলেন, দলের কিংবা কোনো ব্যক্তির প্রভাব খাটিয়ে কেউ পার পাবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে তার নিজ নিজ জায়গা থেকে শতভাগ নিয়মমাফিক কাজ করতে হবে। প্রত্যেককে জবাবদিহির আওতায় আসতে হবে। চাকরি নিয়ে কর্মস্থলে থাকবেন না, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
Leave a Reply