লালমনিরহাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা কদিনের ভারি বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে নদী ভাঙনের তীব্র আতঙ্ক ছাড়াও নানা ধরনের ভোগান্তিতে রয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।
গবাদিপশু নিয়ে এখনও বিপাকে আছেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। ছবি: সময় সংবাদ
গবাদিপশু নিয়ে এখনও বিপাকে আছেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। ছবি: সময় সংবাদ
রোববার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকে ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সে.মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো তলিয়ে রয়েছে চরাঞ্চলের আমন ক্ষেত ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। ফলে এখনো পানিবন্দি প্রায় ৫ হাজার পরিবার। আর দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট। চারপাশে পানি থাকায় গবাদিপশু নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
তবে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিংগীমারী ও সিন্দুর্না, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী এলাকার পরিবারগুলোর মাঝে বিরাজ করছে নদী ভাঙনের আতঙ্ক।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার মহুবর জানান, পর পর কয়েকবার বন্যার কবলে পড়ে তার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। আর চলতি বন্যায় চরাঞ্চলে থাকা তিন বিঘা জমির আমন ক্ষেত এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। এখন আমন চারা সংকটে পড়েছেন তিনি। কীভাবে আবার আমন চারা রোপণ করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকার জসিম জানান, পানিতে চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। আর যেকোনো মুহূর্তে আবারও বাড়তে পারে পানি – এমন আতঙ্কে রয়েছেন তারা। তবে গত কদিন ধরে পানিবন্দি থাকলেও কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি পানিবন্দি এলাকার লোকজন।
বাগডোরা এলাকার রবিউল জানান, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী। যেকোনো মুহূর্তে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের ভাঙন।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি (৪৪) গেট খুলে রাখা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, পানি ধীরে ধীরে কমে যাবে। এছাড়া নদীপাড়ের পরিস্থিতির খোঁজখবর সার্বক্ষণিক রাখা হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নগদ ১৩ লাখ টাকা, ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে।
Leave a Reply