1. admin@khoj24bd.com : admin :
  2. genuinebd.71@gmail.com : admin admin : admin admin
  3. tishibly@gmail.com : gungun gungun : gungun gungun
  4. somankhan92@gmail.com : golam mohiuddin : golam mohiuddin
  5. sakilsangdik@gmail.com : Sakil Faruki : Sakil Faruki
শেখ রাসেলের সমাধিতে ফুল ছিটিয়ে বড় দুই বোনের ভালোবাসা - https://khoj24bd.com
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

শেখ রাসেলের সমাধিতে ফুল ছিটিয়ে বড় দুই বোনের ভালোবাসা

  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ১২ Time View

দৈনিক শিক্ষা নিউজ প্রতিবেদন : আজ ১৮ অক্টোবর মঙ্গলবার শেখ রাসেল দিবস । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন। প্রতিবছরের মতো এবছরও ছোট ভাই শেখ রাসেলের জন্মদিনে ভাইয়ের সমাধিতে পাশে দাঁড়িয়ে ভালোবাসা জানাতে বনানী কবরস্থানে ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা।

প্রয়াত ছোট ভাইয়ের কবরে প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন শেখ রেহানা ফুল দিয়ে ভালোবাসা জানানো শেষে গোলাপের পাপড়ি ছিটান। পরে রাসেলের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন সরকারপ্রধান ও তার বোন শেখ রেহানা।

১৯৬৪ সাল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঘটে চলেছে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ওই সময় পাকিস্তানজুড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডামাডোল। একদিকে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, অন্যদিকে সম্মিলিত বিরোধীদলের প্রার্থী কায়দে আজম মুহম্মদ আলী জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহ।

অনিশ্চয়তা আর অন্ধকারের মাঝেও এ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। যিনি এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে বাঙালি জাতিকে এনে দেবেন মুক্তির স্বাদ, তারই (বঙ্গবন্ধু) ঘর আলো করে জন্ম নিল এক ছোট্ট শিশু।
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবরে ধানম-ির বিখ্যাত ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িটি আলোকিত করে এলো শেখ রাসেল। রাসেলের যেদিন জন্ম হয়, বঙ্গবন্ধু সেদিন ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে প্রচারে অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন।
সেই দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন- ‘রাসেলের জন্মের আগের মুহূর্তগুলো ছিল ভীষণ উৎকণ্ঠার। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও খোকা চাচা বাসায়। বড় ফুফু ও মেজ ফুফু মার সঙ্গে। একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন। সময় যেন আর কাটে না। জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায় আবার জেগে ওঠে।

আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি নতুন অতিথির আগমন বার্তা শোনার অপেক্ষায়। মেজ ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। খুশিতে আমরা আত্মহারা। কতক্ষণে দেখব। ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন। কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালো চুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড়সড় হয়েছিল রাসেল।’

রাসেল নামটি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই। তার প্রিয় লেখক ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। পৃথিবী বিখ্যাত বৃটিশ দার্শনিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বাট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তিনি পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাখলেন রাসেল, শেখ রাসেল। এই নামটিকে ঘিরে নিশ্চয়ই তার মহৎ কোনো স্বপ্ন বা আকাক্সক্ষা ছিল। বঙ্গবন্ধু নিজেও ছিলেন বিশ্ব মানবতার উজ্জ্বল দ্যুতি, নিপীড়িত মানুষের বন্ধু, বাঙালির জাতির পিতা, মুক্তিকামী মানুষের মহান নেতা এবং গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা।

এগারো বছরের শিশু রাসেল প্রতিদিনের মতো সেদিনও ঘুমিয়ে ছিল। আকস্মিক গুলির শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভাঙ্গা চোখ নিয়ে সে আতঙ্কিত হয়, চমকে ওঠে। অবস্থা বুঝে বেগম মুজিব আদরের দুলাল রাসেলকে রক্ষায় কাজের লোকসহ পেছনের দরজা দিয়ে চলে যেতে বলেন। গেট দিয়ে বাইরে যাওয়ার সময় ঘাতকরা তাকে আটক করে।

এ সময় বাড়ির ভেতরে মুহুর্মুহু বুলেটের শব্দ আর বীভৎস আর্তচিৎকার শুনে অবুঝ শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘাতকদের বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ কিন্তু এতটুকু মন গলেনি পরাজিত স্বাধীনতাবিরোধী ঘৃণ্য নরপিশাচদের। আগেই বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সকল সদস্যকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের সময় আতঙ্কিত হয়ে শিশু রাসেল কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল শেখ রাসেলকে।
শিশু রাসেলকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা মানব সভ্যতার ইতিহাসে জঘন্যতম অপরাধ করেছে। এ ধরনের নিষ্ঠুর ‘মার্সি কিলিং’ শুধু রাসেলের জীবনকেই কেড়ে নেয়নি, সেই সঙ্গে ধ্বংস করেছে তার সব অবিকশিত সম্ভাবনাও। বাবার বুকের গভীরে মুখ রেখে সাহস আর বীরত্বের উষ্ণতা নেওয়ার যখনই ছিল শ্রেষ্ঠ সময়, ঠিক তখনই নরঘাতকদের দল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ১১ বছর বয়সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকদের হাতে নির্মম হত্যাকা-ের শিকার হন শিশুপুত্র শেখ রাসেলও। পৃথিবীতে যুগে যুগে রাজনৈতিক হত্যাকা- ঘটেছে, কিন্তু এমন নির্মম, নিষ্ঠুর এবং পৈশাচিক হত্যাকা- কোথাও ঘটেনি।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ তাদের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ আজ সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। একইভাবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ অন্য সংগঠনগুলোও ব্যাপক কর্মসূচি পালন করবে।
জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হল অব ফেমে শেখ রাসেল দিবসের উদ্বোধন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে বিআইসিসির হল অব ফেমে দুপুর আড়াইটায় ‘শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকা- ন্যায় বিচার, শান্তি ও প্রগতির পথে কালো অধ্যায়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার, একই স্থানে সন্ধ্যা ৬টায় ‘কনসার্ট ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও আজ জাতীয়ভাবে সারাদেশে একযোগে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে শেখ রাসেল দিবস-২০২২ পালিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে আজ সকাল ৬টায় বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হবে।

সকাল সাড়ে ৬টায় স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দপ্তর বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ও প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে দেশের সকল বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের উদ্যোগে চিত্রাঙ্কন, দাবা, জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমিতে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সাড়ে ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা, বাংলা একাডেমি প্রকাশিত শেখ রাসেলকে নিবেদিত ছোটদের ছড়া-কবিতার সংকলন ‘দীপ্ত জয়োল্লাস’ গ্রন্থের উন্মোচন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতক চক্রের নির্মম বুলেটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘাতকেরা নিষ্ঠুরভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত বছর থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। এই দিবসের এবারের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দুরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 www.khoj24bd.com bangla News web portal.
Theme Customized By BreakingNews