রঞ্জু-রুপা দম্পতি। ১৭ দিন আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাদের পাঁচ মাসের ছেলে রিদওয়ান। ছেলের মৃত্যু শোক কাটিয়ে না উঠতেই তাদের ৯ বছরের মেয়ে সামিয়াকে অপহরণ করা হয়। এরপর পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমোতে একটি অডিও বার্তা দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই অডিও বার্তা পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর পুলিশ বাড়ির ৪০০ গজ দূর থেকে একটি বনের পাশে মাটি খুঁড়ে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে। দুই সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় এই দম্পতি। তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে। গত শুক্রবার দুপুরে দাড়িয়াপুর গ্রামের এক বনের পাশের নালা থেকে মাটি খুঁড়ে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে সামিয়ার লাশ বাড়িতে আনা হয়।
রঞ্জু মিয়া বলেন, সবাই আমাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। কিন্তু আমি তো সান্ত্বনা নিতে পারছি না। আমি তো শান্ত হতে পারছি না। আমার কোলে তো আর তারা ফিরে আসবে না।’
পুলিশ ও পারিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল সে। পথে একটি দোকানে সহপাঠীরা কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এদিকে বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় মা রুপা আক্তার শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, তার মেয়ে অনেক আগেই বাড়ি চলে গেছে। পরে মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্থানে মেয়ের ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন রুপা।
এর কিছুক্ষণ পর রঞ্জু মিয়ার মোবাইলে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমোতে একটি অডিও বার্তা দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই অডিও বার্তা পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর বাড়ির ৪০০ গজ দূর থেকে একটি বনের পাশে মাটি খুঁড়ে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন বলেন, দুর্বৃত্তরা মেয়েটিকে হত্যার পর বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে একটি অডিও বার্তা দেয়। এত অল্প সময়ে লাশ এমনভাবে পচে যাওয়ার কথা নয়। উদ্ধারকৃত গলাকাটা ও এক চোখ উপড়ে ফেলা লাশের ধরন দেখে বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবছে পুলিশ।
Leave a Reply