আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশে অবস্থান করছে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল। গত ৪ অক্টোবর থেকে আজ ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে অবস্থান করে বিভিন্ন বিভাগ এবং সংস্থার সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে আজ ফেরত যাবেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বেশ কিছু শর্ত পুরণ করা হলেও কয়েকটি শর্ত আংশিক পুরন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। কয়েকটি শর্ত থেকে অব্যাহতিও চাওয়া হয়েছে আইএমএফের কাছে। এর প্রেক্ষিতে শর্ত পূরণ করতে না পারায় ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেননা নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের শর্ত ছিল, সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের রিজার্ভ থাকতে হবে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কিন্তু সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার। বুধবার (১৮ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে জানানো হয়, আইএমএফের রিভিউ টিমের সমাপনী সভা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ব্রিফ করবেন।
প্রসঙ্গত, ৪ অক্টোবর আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মূলত আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্ত বাংলাদেশ কতটা পূরণ করতে পেরেছে এবং সরকারি বিভাগগুলো শর্ত পূরণে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।
আইএমএফের এশিয়া প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে সংস্থাটির এ পর্যালোচনা মিশন বাংলাদেশে আগামী ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত অবস্থান করবে। দ্বিতীয় কিস্তি ঋণ ছাড়ের আগে শর্ত পরিপালন হচ্ছে কিনা, তা পর্যালোচনা করতেই আইএমএফের এবারের সফর।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ মিলিয়ন বা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। আইএমএফের জুড়ে দেওয়া শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাবে দেশ। শর্ত পূরণ হলে দ্বিতীয় কিস্তিতে বাংলাদেশ ৭০ কোটি ৪০ লাখ ডলার ঋণ পাবে চলতি নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে।
এর আগে ২০২৩ সালে ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এর মধ্যে এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণ সুবিধায় ঋণের তিন দশমিক তিন বিলিয়ন বা ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়্যান্স অ্যান্ড সানসেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় এক দশমিক চার বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার। ইতোমধ্যে এ ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলারে ছাড় করে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি।
Leave a Reply