1. admin@khoj24bd.com : admin :
  2. tishibly@gmail.com : gungun gungun : gungun gungun
  3. somankhan92@gmail.com : golam mohiuddin : golam mohiuddin
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:০৯ অপরাহ্ন

ব্যাংক ম্যানেজারকে কলাপাতায় গরম ভাত ও ডিম ভাজি খেতে দেয় সন্ত্রাসীরা

  • Update Time : শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৩ Time View

বান্দরবানে সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের আদ্যোপান্ত জানিয়েছে র‌্যাব। একই সঙ্গে উদ্ধার ম্যানেজার থেকে নানান তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি।

শুক্রবার সকালে পার্বত্য জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার ৯টার দিকে শতাধিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত কুকি-চিন সদস্যরা তাদের নিজস্ব পোশাক পরে বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংকের উত্তর দিক (বেথেলপাড়া) থেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে অতর্কিত হামলা করে মারধর করে অস্ত্রের মুখে পুলিশ, আনসার ও অন্যান্য লোককে জিম্মি করে ফেলে।

এ সময় সোনালী ব্যাংকের ডিউটিরত গার্ড কনস্টেবলসহ সর্বমোট ১০ জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুটি এসএমজি ও ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চায়না রাইফেল ও ৩২০ রাউন্ড গুলি, আনসার সদস্যদের চারটি শটগান ও ৩৫ রাউন্ড কার্তুজ লুট করে। সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা এবং টাকা না পেয়ে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

আল মঈন বলেন, ঘটনাটি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি ও জনমনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। আর ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে র্যাবের একাধিক আভিযানিক দল। অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ও অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও তথ্য সংগ্রহসহ র্যাবের আভিযানিক কার্যক্রম শুরু করে।

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় একপর্যায়ে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ম্যানেজারের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব। পরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কৌশলে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগের ফলে ম্যানেজারকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়।

র‌্যাব জানায়, ম্যানেজারকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার সময় যেন পরিবারের অন্য সদস্যরা অপহরণের শিকার না হন সে লক্ষ্যে র্যাব সু-কৌশলে হস্তান্তর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাদা পোশাকধারী চৌকস একটি দল রুমা থানাধীন বেথেলপাড়া এবং বড়ুয়াপাড়ার আশপাশে অবস্থান নেয়। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা ম্যানেজারকে পরিবারের কাছে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়। পরে র্যাব সদস্যরা ম্যানেজার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে নিরাপত্তা দিয়ে র্যাব-১৫ এর বান্দরবান ক্যাম্পে নিয়ে আসে।

র‌্যাবের কাছে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলা এবং হামলার পরে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন।

ম্যানেজার র‌্যাব জানান, মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শতাধিক সশস্ত্র কুকি-চিন সদস্যদের প্রত্যেকেই রুমা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির উদ্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ব্যাংক এবং আশপাশের এলাকায় ভীতি সঞ্চার করে তাকে খুঁজতে থাকে। লোকের মাধ্যমে জানতে পারে তাকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে এশার নামাজ পড়ছেন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মসজিদে প্রবেশ করে নামাজরত প্রত্যেক মুসল্লিকে জিম্মি করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এর আগে তিনি সন্ত্রাসীদের কৃষি কর্মকর্তা পরিচয় দিলে লোকদের জিজ্ঞাসা করে পরিচয় নিশ্চিত হয় কুকি-চিন। এ সময় সন্ত্রাসীদের সবাই এক ধরনের সামরিক পোশাক পরা ছিল এবং প্রত্যেকের মুখমণ্ডল কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল এবং ব্যাংকের চারপাশে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘিরে রেখেছিল।

ম্যানেজার জানান, সন্ত্রাসীরা জানতে চেয়েছে, ঘটনার দিন ব্যাংকে কত টাকা নিয়ে আসা হয়েছে এবং ব্যাংকের ভল্টে মোট কত টাকা রক্ষিত আছে। সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে ম্যানেজারের কাছে ব্যাংকের ভল্টের চাবি চাইলে তখন ম্যানেজার তাদেরকে কৌশলে ভল্টের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভল্ট ভাঙতে চেষ্টা করে এবং পরে ম্যানেজারের কাছ থেকে আরও জানতে পারে যে, ভল্টে আঘাত করলে সেন্সরের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ব্যাপারটি সোনালী ব্যাংকের হেড অফিস জেনে যাবে। তখন তারা ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই তার চোখ বেঁধে ফেলে।

টানা দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা কোনো এক অপরিচিত পাহাড়ের ঝিরি পথে হাঁটিয়ে নিয়ে যায়। এই সময় তার সঙ্গে ১০-১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ছিল। পথিমধ্যে তারা চোখ খুলে দেয় এবং অন্ধকারে চলার সুবিধার্থে হাতে একটি বাটন ফোন ধরিয়ে দেয়। পথে তারা কিছু সময়ের জন্য বিশ্রামের সুযোগ দেয়। এর পর আবার হাঁটায়। এভাবে একপর্যায়ে রাত আনুমানিক আড়াইটার সময় নীরব অজ্ঞাত এক স্থানে তাকে নিয়ে গিয়ে ঘুমানোর সুযোগ দেয় এবং যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য তারা পাহারা দেয়।

ঘটনার পর দিন সকালে সামান্য নাশতা দিয়ে আবারও হাঁটিয়ে পাহাড়ি ঝিরিপথ দিয়ে অন্য একটি পাহাড়ের ঝিরিতে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় ৩০-৩৫ জনের মতো সশস্ত্র সন্ত্রাসী অবস্থান করছিল। এ সময় তারা কলার পাতায় করে গরম ভাত, ডাল ও ডিম ভাজি খেতে দেয়। পরে সেখান থেকে হাঁটিয়ে অন্য জায়গায় পুনরায় নিয়ে যায়। সেখানে ১৫-২০ মিনিটের মতো বিশ্রামের সুযোগ দেয়। সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে তারা ধাপে ধাপে বিশ্রাম এবং হাঁটার পর ভিন্ন একটি জায়গায় গিয়ে পৌঁছালে আবারও তাকে গরম ভাত, ডাল ও ডিম খেতে দেয়।

র‌্যাব জানায়, অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা ম্যানেজারকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেয় এবং কোনো প্রশাসনিক বা আইনি সহায়তা যাতে না নেয় তার পরিবারকে সে জন্য সতর্ক করে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের ওই সূত্র ধরে র‌্যাব অবস্থান শনাক্ত করে। র‌্যাবের মধ্যস্থতায় সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে বান্দরবানের রুমা বাজার ও বেথেলপাড়া মধ্যবর্তী কোনো এক স্থান থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ ছাড়া সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে যাওয়া অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধারের লক্ষ্যে র‌্যাবের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews