ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজমেলায় আগত ব্যবসায়ী, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মাঝে অসুস্থদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ডিকেএমসি হাসপাতাল। পাশাপাশি সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে সদা প্রস্তুত রয়েছে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে মেডিকেল টিম। প্রতিদিন মেলায় হাজারো ক্রেতা-দর্শনার্থীর সমাগম ঘটছে। তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এদিকে ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ উপলক্ষ্যে নতুন ড্রেসের সমাহার ঘটেছে সংশ্লিষ্ট স্টলগুলোতে।
‘হুর’র হেড অফ সেলস রঞ্জন মজুমদার বলেন, ভ্যালেনটাইনস ডে উপলক্ষ্যে শোরুম সাজিয়েছি নতুন সাজে। নতুন নতুন ড্রেস, যেমন মেহের, মাহা ও স্প্রিং ২৪-এর চাহিদা থাকবে বেশি। শোরুমে ছাড়ও মিলবে বেশি। তরুণীদের বেশি পছন্দ হুরের পণ্য। সাবরিন জাহান তুনতুন বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে এসেছি। হুরের পণ্য আমার কাছে বরাবরই খুব পছন্দের। মেলা ও বিশেষ করে ভ্যালেনটাইনস ডে উপলক্ষ্যে বেশি ছাড় পাব, এজন্য কিনতে এসেছি।
অপরদিকে ঘুরে দেখা যায়, বাণিজ্যমেলায় মূল ভবনের অভ্যন্তরে নির্ধারিত বুথে রোগী দেখছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক নাজমুল আহমেদ। সেবিকা ও ওয়ার্ডবয় সহযোগিতা করছেন। কথা হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে। বলেন, মেলায় এসে কেউ আকস্মিক অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা দিতে এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মেলায় ফ্রি চিকিৎসাসেবা পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা। পূর্বাচলের স্থায়ী প্যাভিলিয়নের চলমান মাসব্যাপী ২৮তম বাণিজ্যমেলার পূর্ব প্রান্তে দেখা গেছে ডিকেএমসি হাসপাতালের চিকিৎসক ফাহাদের নেতৃত্বে ৩ সেবিকা, ২ কর্মকর্তাসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডবাই আছে। এখানেও রোগীরা লাইন ধরে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ব্লাড প্রেসার মাপা, নেবুলাইজার সার্ভিস, অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে দেখা গেছে হাসপাতালের বুথটিতে। কথা হয় হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলামের সঙ্গে। বলেন, রূপগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতাল ডিকেএমসি। এ হাসপাতাল ৩ বছর ধরে পূর্বাচলে মেলার অভ্যন্তরে আলাদা বুথ করে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। মেলায় এ পর্যন্ত পাঁচশ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন রক্তের গ্রুপ, রক্ত পরীক্ষাসহ সাধারণ সেবা নিচ্ছেন অন্তত দুইশ জন। যাদের অবস্থা একটু জটিল তাদের বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্সে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে কথা হয় রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আইভী ফেরদৌসের সঙ্গে। তিনি জানান, মেলায় প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষ আসছেন। যে কেউ যে কোনো সময় অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় আমাদের সরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা চালু রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পাঠাচ্ছি প্রয়োজনীয় লোকেশনে। মেলায় প্রতিদিন পালাক্রমে আমাদের চিকিৎসকরা থাকেন। পাশাপাশি বেসরকারি হাসাপাতালের বুথ রয়েছে। এবার প্রথম দিকে শীত বেশি থাকায় সর্দি-জ্বর-কাশি নিয়ে অনেকে আসেন। এরকম ৬ শতাধিক লোক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।
মেডিকেল টিম সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফ্রি ব্লাড সুগার নির্ণয়, রক্তচাপ মাপা, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শসহ ওষুধও দেওয়া হচ্ছে বুথ থেকে। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে হাসপাতাল পর্যন্ত বিনা খরচে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ডিকেএমসির চিকিৎসক নেয়ামুল হাসান বলেন, কেউ অসুস্থ হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখানে সব বয়সি মানুষের পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ আছে।
Leave a Reply