1. admin@khoj24bd.com : admin :
  2. tishibly@gmail.com : gungun gungun : gungun gungun
  3. somankhan92@gmail.com : golam mohiuddin : golam mohiuddin
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

মানুষের আয়ু হবে ১২০ বছর, কী বলছেন বিজ্ঞানীরা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৮ Time View

মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে– কথাটা শাশ্বত হলে বাস্তবোচিত নয়। তাই বলে চেষ্টা যে নেই তা তো নয়।

কল্পলোকের সেই গল্পগাঁথাকে সুন্দর ভুবনে নিয়ে আসার জন্য কাজ করে চলেছেন একদল বিজ্ঞানি।

তবে মৃত্যুকে জয় বা অতি দীর্ঘ আয়ু লাভের ভালো–মন্দ দুটো দিকই আছে। চার পর্বের এই আয়োজনে ফজলুল কবির তুলে ধরেছেন মানুষের সেই স্বপ্নযাত্রাকে।

মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভূবনে’– এটা মানুষের চিরায়ত আকাঙ্ক্ষা। কে মরতে চায়? সবাই চায় বেঁচে থাকতে এক অনির্দিষ্টকাল ধরে। অমরত্বের জন্য সেই অতীত থেকে মানুষের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। সেই চেষ্টারই অংশ হিসেবে কিছু সাফল্য এসেছে বটে। বিজ্ঞানীরা এবার বলছেন—মানুষ ১২০ বছর আয়ু পেতেই পারে। এটা এখন আর অকল্পনীয় নয়।

আজকের দিনে মানুষের শত বছর আয়ু আর অকল্পনীয় কিছু নয়। তবে বিরল তো বটেই। বিরল বলেই এখনো শতবর্ষী মানুষের সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে খবর বেরোয়। আমেরিকা ও ব্রিটেনে এখনো তাদের জনসংখ্যার মাত্র দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ মানুষ শত বছর আয়ু পায়। শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি জাপানে। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী ওই দেশে শতবর্ষীর সংখ্যা ৯২ হাজার ১৩৯।

বয়সের এ জায়গাতেই বড় সুখবর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের চলমান প্রচেষ্টা সফল হলে মানুষের জন্য শততম জন্মদিন পালন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হবে। এমনকি ১২০ বছর আয়ু তখন আর বিরল কিছু বলে বিবেচিত হবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই বাড়তি আয়ুও মানুষ হয়তো সুস্বাস্থ্য নিয়েই কাটাতে পারবে।

অমৃতের সন্ধানে তো মানুষ আজ নামেনি। নেমেছে বহু আগে থেকে। খুঁজেছে এমন কোনো জাদুকরি আরক, যা মানুষকে এনে দিতে পারবে অমরত্বের স্বাদ। কিন্তু সে শুধু অধরাই থেকে গেছে। মানুষ সেই চির কাঙ্ক্ষিত অমরত্বের সন্ধান কখনো পায়নি। কিন্তু থেমেও থাকেনি। যুগে যুগে দীর্ঘায়ুর সন্ধানে বিস্তর সন্ধান চলেছে। নিদেনপক্ষে বয়স আটকে দেওয়া। মুখে–চোখে কিংবা শরীরের কার্যক্ষমতায় যেন বয়সের ছাপ না পড়ে, সে জন্য সে কত না উপায় খুঁজেছে এবং খুঁজছে। আজকের বাজার খুঁজলেও পাওয়া যাবে এমন অজস্র অ্যান্টি–এজিং ক্রিমের সন্ধান, পাওয়া যাবে চিরযৌবনের প্রতিশ্রুতিবাহী জড়িবুটির সন্ধান।

এ ক্ষেত্রে দেশে দেশে হাতুড়ে ডাক্তারদের খপ্পরেই মানুষ বেশি পড়েছে। কেউ হয়তো পারদ, কেউ–বা আর্সেনিক, আবার কেউ হয়তো এমন সব ভেষজ–অভেষজ বড়ির পরামর্শ দিয়েছে, যা শেষতক নিয়ে এসেছে বিপর্যয়। কিন্তু মানুষের চেষ্টা থেমে থাকেনি। সে চেষ্টার ফল কিছু মিলেছে অবশ্য।

জরামুক্ত হওয়ার চেষ্টা থেকেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতি হয়েছে সময়ের সাথে। স্বাস্থ্যসেবার প্রসার হয়েছে। একেক দেশে একেক রকমভাবে। এতে বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। দেশে দেশে গড় আয়ু কেবলই বাড়ছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭২ বছরের বেশি। আর ৮০ বছরের বেশি গড় আয়ুর দেশ বিশ্বে কম নয়। জাতিসংঘের হিসাবমতে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গড় আয়ু এখন মোনাকোতে, সেটি ৮৭ বছরের কিছু বেশি। তবে দেশটিতে নারীদের গড় আয়ু প্রায় ৮৯ বছর। শীর্ষ ১০–এ থাকা দেশগুলোর প্রতিটিতে গড় আয়ু ৮৪ বছরের বেশি। এ তালিকায় আছে মোনাকো, হংকং, ম্যাকাও, জাপান, সুইজারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভ্যাটিকান সিটি, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও লিচটেনস্টেইন।

কিন্তু এটি মুদ্রার এক পিঠ কেবল। এখনো বিশ্বের বহু দেশে গড় আয়ু ৬০ বছরের নিচে। এ ক্ষেত্রে আফ্রিকার দেশের সংখ্যাই বেশি। বোঝাই যাচ্ছে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়াই এর মূল কারণ।

আয়ুর সাথে স্বাস্থ্যসেবার এই সম্পর্কই আসলে পথ দেখাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবার মান আরও উন্নত করা গেলে অমরত্ব না হলেও গড়ে শত বছর আয়ু পাওয়া অসম্ভব নয়। সঠিক খাবার, জীবনযাপন প্রণালী, ও ওষুধ–পথ্য নিশ্চিত করা গেলে মানুষের আয়ুর খাতায় আরও কয়েক দশক যোগ করা যাবে।

এই অভিমত বেশ যুক্তিযুক্ত। একটু ইতিহাস ঘাঁটলেই বিষয়টি বোঝা যাবে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে ২০০৫ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, রোমান সাম্রাজ্যের সময় জন্মকালে মানুষের গড় আয়ু ছিল ২৫ বছর। মধ্যযুগে ইউরোপে এই গড় আয়ু বেড়ে ৩৩ বছর হয়। আর বিশ শতকের শুরুর দিকে এ গড় ছিল সর্বোচ্চ ৫৫ বছর।

বোঝাই যাচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি আসলে সম্ভব হয়েছে উন্নত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার কারণে। ফলে এর মান আরও বাড়াতে পারলেই তো কেল্লাফতে। সে চিন্তাই করছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষত মানুষের বয়সজনিত সমস্যা রোধের দিকে তাঁরা এখন মনোযোগ দিচ্ছেন।

এরই মধ্যে এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি এসেছে। বয়োবৃদ্ধিজনিত সংকট কমাতে অন্তত পরীক্ষাগারে সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একটু ব্যাখ্যা করা যাক—বয়স বাড়লে শরীরে কিছু জৈবিক পরিবর্তন হয়। নতুন কোষের সৃষ্টির তুলনায় কোষের মৃত্যুর হার বেড়ে যায়। এ দুইয়ের ব্যবধান যত বাড়ে বয়সজনিত সংকট তত বাড়তে থাকে। এই ব্যবধান বৃদ্ধির রাশ টেনে ধরতে পারলেই বয়সজনিত সংকট অনেকটা কমে যাবে। এ বিষয়ে পরীক্ষাগারে ইঁদুরসহ কিছু প্রাণীর ওপরও পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা সফল হয়েছেন।

কীভাবে? এটা জানা কথাই যে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস দীর্ঘায়ু পেতে সহায়ক। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রাণীর শরীর কত ক্যালরি করে গ্রহণ করছে, তার একটা হিসাব রাখা হয়। আজকের দুনিয়ায় এই সঠিক খাদ্যাভ্যাস নিয়ে কম কথা হচ্ছে না। সচেতন মানুষমাত্রই একটা সঠিক ডায়েট মেনে চলতে চান। কিন্তু এত নিয়ম মেনে চলা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ শরীরে যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, সেই একই প্রভাব ফেলে কিছু বিশেষ ওষুধ। কী সেগুলো? এর একটি হচ্ছে টাইপ টু ডায়াবেটিসের জন্য অনুমোদিত ওষুধ মেটফরমিন। অন্যটি র‍্যাপামাইসিন, যা একটি ইমিউনোসাপ্রিজেন্ট, যা মূলত অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সময় রোগীর শরীরে দেওয়া হয়। পরীক্ষাগারে বিভিন্ন প্রাণীকে এ ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করে বয়োবৃদ্ধিজনিত শারীরিক সংকট কমতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া আরেকটি পথের কথা বলা হচ্ছে। সেটি হলো শরীরের বয়োবৃদ্ধ কোষগুলোকে মেরে ফেলা। বয়োবৃদ্ধ বা সেনসেন্ট কোষগুলোর ধর্ম হলো—তারা মরেও না, বাড়েও না। অর্থাৎ নতুন কোষ তৈরি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে তারা। শুধু তাই নয়, তারা কোনো কাজেও লাগে না। এটুকু হলেও হতো। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন এজিং–এ প্রকাশিত গবেষণা বলছে, এ কোষগুলো কিছু রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা শরীরের কোনো কাজে তো লাগেই না, বরং পার্শ্ববর্তী অন্য সুস্থ কোষগুলোকে নষ্ট করতে ভূমিকা রাখে। বিজ্ঞানীরা এই কোষগুলোকে হত্যা করতে চান। কিন্তু শরীরের অন্য সুস্থ কোষকে বাঁচিয়ে বেছে বেছে এমন কোষ হত্যা করাটা মুখের কথা নয়। কিন্তু লক্ষ্যটি পরিষ্কার।

কাজটি কঠিন হলেও এই লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের গবেষকেরা এখন দেখছেন, কীভাবে শরীরের কোষগুলোকে নবযৌবন দেওয়া যায়। এ লক্ষ্যে তাঁরা কোষের ক্রমোসোমে থাকা ‘এপিজেনেটিক’ নিয়ামকগুলোয় পরিবর্তন আনার পথ খুঁজছেন।

কথা হলো এই এপিজেনেটিক নিয়ামকগুলো আসলে কী এবং এতে পরিবর্তন করলে আদতে কী হবে? আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ব্যাখ্যামতে, এপিজেনেটিক নিয়ামক নিয়ে গবেষণা আসলে পরিবেশ–আচরণ ইত্যাদির কারণে শরীরে থাকা জিনের ওপর পড়া প্রভাব নিয়ে আলোচনা করে। এপিজেনেটিক পরিবর্তন জেনেটিক পরিবর্তনের মতো নয়। এই পরিবর্তনের ফলে ডিএনএ বিন্যাসে কোনো পরিবর্তন হয় না। কিন্তু শরীর কীভাবে ডিএনএ বিন্যাসকে বিবেচনা করবে, তার একটি পরিবর্তন সে করতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তনের পর আবার তাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়েও আনা যায়।

বিজ্ঞানীরা চাইছেন, এই এপিজেনেটিক নিয়ামকগুলো পরিবর্তন করতে, যা আদতে কোষকে নির্দেশ দেয় সে কোন জিনকে সক্রিয় করবে। মানুষের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই নিয়ামকগুলো স্থির হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আচরণ, অভ্যাস ও পরিপার্শ্বের ওপর ভিত্তি করে। ফলে এই নিয়ামকগুলোকে পরিবর্তন করা সম্ভব হলে ৬৫ বছরের মানুষের দেহে এমন কোষের জন্ম দেওয়া সম্ভব হতে পারে, যা ২০ বছর বয়সীর শরীরেই কেবল থাকা সম্ভব।

মোটাদাগে এই পর্যায়ে বিজ্ঞানীরা দুটি উপায়কে পাখির চোখ করেছেন। প্রথমটি আগেই বলা হয়েছে—সেনেসেন্ট কোষ অপসারণ, যা বুড়িয়ে যাওয়াকে রোধ করবে। আর দ্বিতীয় উপায় হলো—এপিজেনেটিক নিয়ামকগুলোয় পরিবর্তন এনে কোষের যৌবনের নবায়ন।

এ ক্ষেত্রে একটাই দুশ্চিন্তা থেকে যায়। আর তা হলো—মস্তিষ্ক। শরীরের অন্য সব থেকে মস্তিষ্ক একেবারেই আলাদা। ফলে শরীরের অন্য সব কোষের বুড়িয়ে যাওয়া থামিয়ে দেওয়া এই নিশ্চয়তা দেয় না যে, মস্তিষ্কও একইভাবে তরুণ রাখা যাবে। মস্তিষ্কের সক্ষমতার একটা সীমা আছে, যা প্রচলিত আয়ুষ্কাল দ্বারাই প্রাকৃতিকভাবে নির্ধারিত হয়। মস্তিষ্কের সক্ষমতা ধরে রাখার সেই চেষ্টাই করছেন। তবে এটি কিন্তু স্মৃতিবিভ্রাট বা ডিমেনশিয়া থেকে আলাদা। স্মৃতিবিভ্রাট কিছু সুনির্দিষ্ট কারণে হয়। এজন্য বয়সের কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া রোধে অন্যভাবে কাজ করতে হতে পারে।

তবে শরীরের বুড়িয়ে যাওয়া রোধে বিজ্ঞানীদের হাতে একাধিক উপায় থাকলেও এগুলো পরীক্ষা করার সুযোগ তাঁরা সেভাবে পাচ্ছেন না। পরীক্ষাগারে ইঁদুর বা গিনিপিগ বা এমন কিছুর ওপর প্রয়োগ করে তাঁরা কিছু সুফল অবশ্য পেয়েছেন; কিন্তু এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে মানুষের ওপর যে পরীক্ষা করার প্রয়োজন, তা তাঁরা করতে পারছেন না। কারণ, ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বয়োবৃদ্ধিকে চিকিৎসার আওতাধীন কোনো সংকট হিসেবে এখনো স্বীকার করে না। আবার এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরীক্ষা চালাতে হলে বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে অনেক মানুষের ওপর কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন। ফলে এর সাথে টাকা–পয়সার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এর সমাধান নিয়ে বিজ্ঞানীরা তেমন চিন্তিত নন। কারণ, বিশ্বের শতকোটিপতিরাই মূলত দীর্ঘ আয়ুষ্কাল পেতে বেশি উদ্‌গ্রীব।

এতসব সংকট সত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা কিছু পরীক্ষা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—আমেরিকার ৬০ ও ৭০ বছর বয়সী তিন হাজার মানুষের ওপর তাঁরা মেটফরমিনের পরীক্ষা চালাচ্ছেন। তাঁরা দেখতে চাইছেন, এই ওষুধের প্রয়োগের ফলে পরীক্ষাধীন ব্যক্তিদের আয়ুষ্কাল বাড়ছে কি–না। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের পরীক্ষা বেশ সময়সাপেক্ষ। আর নমুনা বিন্দু হিসেবে এই তিন হাজার নমুনা এ ধরনের পরীক্ষার জন্য বেশ কম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews