1. admin@khoj24bd.com : admin :
  2. tishibly@gmail.com : gungun gungun : gungun gungun
  3. somankhan92@gmail.com : golam mohiuddin : golam mohiuddin
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
ড.কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম এলডিপির কার্যালয়ে জনগণের উদ্যেশে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দাউদকান্দতে মোল্লা কান্দি লাল মিয়া পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব কুমিল্লা পেশাজীবী সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রেলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় জাল এফিডেভিট তৈরী করে বাল্যবিয়ে পড়ানোর দায়ে কাজির ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের জেল! এমপি’র নাম ভাঙ্গীয়ে জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে হুমকি দক্ষিণখানে রিকশাচালকদের মাঝে পানি বিতরণ করলেন খন্দকার সাজ্জাদ তীব্র তাপপ্রবাহে রিকশাচালকদের মাঝে পানি ও স্যালাইন বিতরণ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ১৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল ১০ দিনে তুরাগ থানার পরিবর্তনের ছোঁয়া কালীগঞ্জের নাগরিতে সন্ত্রাসীদের তান্ডব

বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার ভূমিকা বাড়াবাড়ি-ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৬ Time View

মুক্তা মাহমুদ : ফিলিস্তিনের গাজায় একমাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত ৭ই অক্টোবর ইসরাইলে হামাস হামলা করার পর থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এই একমাসে সাড়ে ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হত্যা হয়েছে। গাজার পরিস্থিতি এবং সেখানে ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, জাতিসংঘ এবং ওআইসি’র ভূমিকা নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বৈশাখী টেলিশিনকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। এই সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকার ভূমিকারও সমালোচনা করেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত।

তাঁর সাক্ষাতকারের বিস্তারিত-

প্রশ্ন: আমরা প্রতিদিন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে গাজার ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি। আপনি কি মনে করেন সেখানে আরও কিছু ঘটছে যা আমরা এখনও জানি না?

রাষ্ট্রদূত: আমি বিশ্বাস করি পুরো বিশ্বই দেখছে ফিলিস্তিনের গাজায় কি হচ্ছে। আমার মতই বিশ্ব তা দেখছে সত্যিকার অর্থেই সেখানে কি হচ্ছে। আমার কাছে বিশেষ কোন মাধ্যম নেই যার মাধ্যমে আমি জানতে পারবো আরও অনেক কিছু। কিন্তু ভাববার বিষয় হচ্ছে সেখানে কেন তা (হামলা ও হত্যাজ্ঞ) হচ্ছে? সেখানে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, আর এই হত্যাযজ্ঞে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

এটার অবশ্যই একটা বিশেষ অর্থও আছে যা সত্যিকার অর্থেই পৈশাচিক। বেনজামিন নেতানিয়াহু (ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী) এবং তার সরকার সত্যিকার অর্থেই জানে তাদের রাজনৈতিক কোন ভবিষ্যত নেই। ইসরাইলিরা বিশ্বাস করে তিনি বা তার সরকার তাদের রক্ষা করতে পারবে না। গেল সাত অক্টোবর যা ঘটেছিল তাতে তারা তাই বিশ্বাস করে। সেই পরিস্থিতিতে তিনি (নেতানিয়াহু) নতুন কিছু ভাবতেই পারতেন, কিন্তু বেনজামিন জনগণের কাছে নিজেকে নায়ক প্রমাণ করতেই ফিলিস্তিনের ওপর পাল্টা হামলাই শুধু নয় গাজা উপতক্যায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো শুরু করে। তাদেরকে নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত করতে ভয়ানক যুদ্ধ শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত তিনি তাই করে যাচ্ছেন। তার এই বর্বরতার সমর্থন করতে আমেরিকাকেও বাধ্য করেছে। নৃশংস এই হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে তিনি সবার কাছে তার নায়কোচিত আচরণ প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। কিন্তু তিনি এখনো বুঝতে চাচ্ছেন না শিশুদের রক্ত ঝরিয়ে নায়ককোচিত আচরণ প্রমাণ করা যায় না। অথচ এটাই সেখানে এখন সত্যিকার অর্থে ঘটছে।

আপনি আমাকে বলতে পারেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কারা নিয়ন্ত্রণ করছে? পশ্চিমা গণমাধ্যম কারা চালাচ্ছেন বা কারা এর মালিক? এগুলোর বেশিরভাগই চালায় ইহুদিদের লবি। তাই তারা (ইসরাইল) যা বলতে চায় তাই তারা বলাচ্ছে গণমাধ্যম দিয়ে। তারা তাদের নিজেদের ধারণাই সেখানে প্রচারের ব্যবস্থা (ইনজেক্ট) করছে। এবং সেটাই প্রচার হচ্ছে। তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে? আমি হলফ করে বলতে- পারে এইসব গণমাধ্যম স্বাধীন নয়। দেখেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে এই যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহটা খেয়াল করেন- দেখবেন সেখানকার (ইসরাইলের) সাধারণ মানুষ প্যালেস্টাইনের জনগণকে সমর্থন জানিয়েছে। তারা জানত অন্ধকার কোনটা আর আলো কোনটা। কিন্তু পরক্ষণেই তারা (পশ্চিমা গণমাধ্যম) মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে শুরু করে সত্যিকারের ঘটনা তারা আড়ালে রেখে মিথ্যাটাকেই সামনে আনছে।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কিছুটা হলেও সত্যিকারের বিষয়গুলো জানা যাচ্ছে। এজন্য আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই। গণমাধ্যমগুলোতে গাজার নজিরবিহীন নৃশংস ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে না। যে কারণে অনেকে জানতেও পারছে না সত্যিকার অর্থেই সেখানে ফিলিস্তিনীদের ওপর কি নৃশসতাই না চালাচ্ছে ইসরাইল। গাজায় বিদ্যুৎ নেই, খাবার পানি নেই, জ্বালানি নেই, কোন ওষুধ নেই, দুই দশমিক চার মিলিয়ন জনগণ পিপাসার্ত, ক্ষুধার্ত। জীবনের জন্য যা জরুরি সেই জিনিসগুলোই এখন সেখানে নেই। গাজার জণগণকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে ইসরাইল ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। গাজা সত্যিকার অর্থেই অন্ধকারে আছে। গাজাকে এখন বলতে পারেন পৃথিবীর দোজখ।

বিশ্ব এটা দেখছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ বিষয়ে চুপ থাকতে পারবে না, কারণ গাজার জনগণকে বিশ^বাসী সমর্থন করে। আমি বিবিসি এবং সিএনএন দেখলাম, যতবারই তারা গাজার ধ্বংসযজ্ঞ হত্যাযজ্ঞ দেখাচ্ছে, পরক্ষণেই সাত অক্টোবরের ঘটনা তুলে ধরছে। তারা এও জানাচ্ছে ইসরাইলের বেসামরিক মানুষ মারা যাচ্ছেন, তারা কাঁদছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। বিষয়টা এমন তারা গাজা আর ইসরাইলকে সমান করে দেখাতে চাচ্ছেন। সমানভাবে তুলে ধরে মানুষের মনে তারা এই বিশ্বাস তৈরি করাতে চাচ্ছেন যে, গাজার মতই ইসরাইলের অবস্থা। গাজায় যা হয়েছে তাই ইসরাইলে হচ্ছে। এটা সত্যি নয়। তারা সাত অক্টোবরের ঘটনাকে সামনে এনে বিষয়টি হালকা করতে চান।

বিষয়টি তো সাত অক্টোবরের নয়। ৭৫ বছরের পেছনের ইতিহাস জানতে হবে। কেন গাজার মানুষ এখন শরণার্থী জীবন যাপন করছে? ইসরাইলিরা প্যালেস্টাইনের মানুষকে তাদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত করেছে। তাদের জাতীয়তাবাদ কেড়ে নিয়েছে। মানুষ হত্যা করেছে, নারী পুরুষ শিশু নির্বিশেষে। ৭৫ বছর ধরে তারা শরণার্থী জীবন যাপন করছে। সেখানকার মানুষ এগুলোতো ভুলে যায়নি। মানুষকে মূল কারণ জানতে হবে। গাজার মানুষ ১৭ বছর ধরে জিম্মি নিপীড়কদের হাতে।

প্রশ্ন: স্বাধীনতার জন্য ফিলিস্তিনের দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ। এখানকার মানুষ জানতে খুব কৌতূহলী কেন সম্প্রতি হামাসকে ইসরাইলে হামলা করতে হলো?

রাষ্ট্রদূত: বেশিরভাগ মানুষই জানেন গাজার পরিস্থিতি। গাজার আয়তন তিনশ’ ৬০বর্গ কিলোমিটার। যা ঢাকার চেয়ে একটু বড়। সেখানে প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বাস। তারা চারদিকে থেকে অবরুদ্ধ। খোলা আকাশে নিচে তারা জেলের মধ্যে। পরিস্থিতি যখন এই, তখন সেখানকার মানুষের কাছে আপনি কি প্রত্যাশা করেন? এতকিছুর পরও কি আপনি আশা করেন সেখানকার জনগণ দখলদারিত্ব মেনে নেবেন? নিপীড়ককে মেনে নেবেন? সারাজীবন গাজাবাসী এভাবেই বেঁচে থাকবেন? দখলদারিত্বের কাছে গাজাবাসী মাথা নত করেননি, করবেনও না। আমার ধারণা, গাজার মানুষ অন্য সাধারণ মানুষের মতই যদি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারতেন তাহলে তারা এই যুদ্ধে জড়াতেন না।

আপনি তাদের বসবাসের, চলাফেরার স্বাধীনতা দিন, অন্য যে কোনো মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবন দিন, সবকিছুতে তাদের প্রবেশাধিকার দিন, তাহলে সেখানকার পরিস্থিতি ভিন্ন হবে। তাহলে আপনি তাদের দোষারোপ করতে পারতেন কেন আপনারা হামলঅ করছেন? কিন্তু তা করা হচ্ছে না। ইসরাইল সরকার, তাদের সেনাবাহিনী গাজার মানুষকে ১৭ বছর ধরে জিম্মি করে রেখেছে। জিম্মি আছে ২৪ লাখ লোক। ফিলিস্তিনিরা অন্যান্য জাতির থেকে আলাদা। দুর্ভাগ্যবশত ফিলিস্তিনি জনগণ গত ৭৫ বছর ধরে মানবজাতির ইতিহাসে যা সহ্য করছে আমার মনে হয় না অন্য কোন জাতি তা সহ্য করছে। এটার (স্বাধীনতার) জন্য আমরা চড়া মূল্য দিতে প্রস্তুত। কিন্তু পুরো জীবন নয়।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের মানুষ গাজার ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন? উদ্বিগ্ন সেখানকার মানুষের জীবন নিয়েও। এ বিষয়ে যদি কিছু বলতেন?

রাষ্ট্রদূত: তারা (ইসরাইল) আমাদেরকে পশুর মত মনে করেন। নারী শিশুদের জীবন পশুর মত শিকার করছে তারা। এই তথ্য বিশ্ববাসীকে জানতে হবে। গাজায় শিশুরা জীবন দেখেনি। ফিলিস্তিনকে মানবিকভাবে দেখতে হবে বিশ্ববাসীকে। প্রত্যেক জীবের বেঁচে থাকার অধিকার আছে এই পৃথিবীতে। পৃথিবীতে সাদা কালো বর্ণের ও নানা ধর্মের মানুষ আছেন, সবাইকে আমি ফিলিস্তিনের পাশে থাকার আহ্বান জানাই। ফিলিস্তিনের জন্য কি দরকার? কি করতে পারেন? একটা জিনিসই চায় ফিলিস্তিনের জনগণ- সেটা শান্তি। আর শান্তির জন্য ন্যায়বিচার। তারা শরণার্থী হয়ে বাঁচতে চায় না। নিজস্ব পরিচয়ে, নিজস্ব জাতীয়তাবাদ, পাসপোর্ট, সম্মান চায়। এটার জন্য আমরা সবকিছু করতে পারি। শান্তিপ্রিয় বিশ^বাসী ফিলিস্তিনের জন্য কাজ করবে। তারা একা নয়।

প্রশ্ন: গাজার নতুন সংকটের বিষয়ে আপনি জাতিসংঘের পাশাপাশি আমেরিকা এবং তাদের মিত্রদের ভূমিকাকে কীভাবে দেখছেন?

রাষ্ট্রদূত: জাতিসংঘ এক নিয়মে কাজ করছে না। বলতে গেলে সংস্থাটি এখন আমেরিকার কাছে জিম্মি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হত্যা বন্ধে ইতিমধ্যে তিনবার পদক্ষেপ নিয়েছে যুদ্ধ বিরতির জন্য। সেখানে আমেরিকা বারবারই ভেটো দিয়েছে। যে কারণে কিছুই হয়নি। যুদ্ধবিরতি চেয়ে সাধারণ পরিষদেরও একই অবস্থা। জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস ইসরাইলে বিরুদ্ধে যা বলেছেন তাতে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। সংস্থার প্রধান হিসেবে তার কাছে নিরপেক্ষতাই মানুষ আশা করে মানুষ। জাতিসংঘকে প্রভাবিত করতে পারে একমাত্র আমেরিকা। তারাই বলেছে, কোন যুদ্ধ বিরতি নয়। তাই হচ্ছে সেখানে। ইসরাইলিরা কার কাছ থেকে নিজেদের আত্মরক্ষা করছে? একটি শিশু থেকে? একজন গর্ভবতী নারী থেকে? ইসরাইলের এটা কোন ধরনের আত্মরক্ষা? পশ্চিমা গণমাধ্যম যেমনটা বলছে? শক্তির দিক থেকে যদি তুলনা করা যায় ইসরাইলের যুদ্ধ সরঞ্জাম অত্যাধুনিক এবং সুসজ্জিত। প্রযুক্তিগত দিক থেকেও তারা অতুলনীয়। আমার প্রশ্ন আর কত মানুষকে, আর কত শিশুকে মেরে তারা নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়? আর কত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে তারা থামবে? গণহত্যা তারা কখন থামাবে?

প্রশ্ন: একইভাবে, আপনি বিশ্বজুড়ে ওআইসি এবং মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকাকে কীভাবে দেখেন?

রাষ্ট্রদূত: আমি এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। এটা আমাদের জন্য বেদনা এবং হতাশারও বটে। মুসলিম বিশ্ব সব বিষয়ে একমত নাও হতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে তো তারা এক হতে পারেন। তারা যুদ্ধ বিরতির জন্য দাবি জানাতে পারেন। শোক জানানো বা বিবৃতি দিয়ে এই হত্যা থামাতে পারবে না। তারা ইসরাইল সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে। তাদের জন্য ওষুধসহ মানবিক সাহায্য দরকার। তাদের জন্য মুসলিম বিশ্ব যে বিবৃতি দিচ্ছে নিপীড়করা তা পড়েও দেখে না। এ নিয়ে তারা কোন গা করছে না। তাদেরকে অন্য উপায় অবলম্বন করতে হবে। ফিলিস্তিনি জনগণ অস্ত্র চায় না। মুসলিম দেশগুলো দাবি তুলতে পারে যুদ্ধ বিরতির। তারা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবেও পদক্ষেপ নিতে পারে। এই গণহত্যা বন্ধে তারা জোরালো দাবি তুলুক, সেটাই চাই।

প্রশ্ন: গাজার এই চলমান সংকটে ফিলিস্তিনকে সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে আপনি কি আরও কিছু আশা করেন?

রাষ্ট্রদূত: গাজার বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাহসী ভূমিকা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। আমি ফিলিস্তিনবাসীর পক্ষ থেকে এদেশের জনগণ, সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওআইসি সম্মেলনে যুদ্ধ বিরতি চেয়ে বিশ্ব তোদের প্রতি জোরালো দাবি তুলেছেন, তা সত্যিকার অর্থেই সাহসী ভূমিকা । তিনি বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই দাবি তুলেছেন। বাংলাদেশ এভাবেই পাশে থাকবে এটাই আশা করে ফিলিস্তিনবাসী।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের রাজনীতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ভূমিকাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

রাষ্ট্রদূত: ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার ভূমিকা যেভাবে দেখেছি তার উল্টো চিত্রই দেখি গাজার বিষয়ে। ইউক্রেনের চেয়ে গাজা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ গাজায় হামলার জন্য ইসরাইলকে অন্ধভাবে সমর্থন ও অস্ত্র দিচ্ছে তারা। এতে প্রশ্ন জাগে, ফিলিস্তিনিদের জন্য কেন একই অবস্থান নেয়না যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা নিজেরাই আইন তৈরি করে সেই আইনের মুখোমুখি তারাই দাঁড়াচ্ছে। নিজেরা সেই আইন মানছেন না, অথচ অন্যকে মানতে বাধ্য করছেন। এটা কেমন? এই আইন আপনার নিজের মত করে নিজের জন্য তৈরি? আপনি মানলে আমাকে মানতে বলতে পারেন।

স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার মূল্যবোধ- এগুলো নিয়ে আপনি (আমেরিকা) ছবক দিচ্ছেন? কিন্তু আপনি কেন মানছেন না? এগুলো সঠিকভাবে আপনি পালন করছেন কিনা ভাবুনতো! সঠিকভাবে পালন করলে কি করে আপনি নির্বিচারে নিরপরাধ মানুষ হত্যায় ইসরাইলকে সমর্থন জানাতে পারেন? আপনিই মানবাধিকার গণতন্ত্র এবং মূল্যবোধ কোনটাই চর্চা করছেন না। আপনার কোন অধিকার নেই এসব বিষয়ে অন্যকে অর্থাৎ অন্যদেশ বা অন্য জাতিকে জ্ঞান দেবার।

বাংলাদেশের জনগণের এটা প্রশ্রয় দেয়া ঠিক হবে না। তাদের কোন অধিকার নেই এসব বিষয়ে জ্ঞান দেবার। কারণ আমেরিকা তার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই এসব আইন তৈরি করে। নির্বাচন বা বাংলাদেশের রাজনীতি- সবই এদেশের নিজস্ব বিষয়। এদেশের জনগণনই এ নিয়ে মতামত ও সিদ্ধান্ত নেবেন।

নির্বাচনের কথা যখন বলি, সবাই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। এটা এদেশের মানুষ ঠিক করবে। অন্যদেশ কেন এ নিয়ে তাদের মতামত আরোপ করবে? আমেরিকা পর্যবেক্ষণ করতে পারে। কিন্তু এটা কিভাবে হবে তা আরোপ করতে পারে না। আমেরিকা তার নিজের দেশে চর্চা করুক, অন্য দেশে কেন? বাংলদেশের জনগণ জীবনের মূল্যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যের হস্তেক্ষপ একদমই প্রশ্রয় দেয়া ঠিক হবে না বাংলাদেশের জনগণের। বাংলাদেশের নিজস্ব একটা স্বাধীন মতামত আছে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও মূল্যবোধকে সামনে এনে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এক ধরনের জোচ্চুরি, জালিয়াতি। মার্কিন নীতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা পুরো পৃথিবীতে রাজত্ব করতে চায় অন্যকে পুতুল বানিয়ে। এটাই তাদের নীতি। আর এটা লুকানো কোন বিষয় নয়। তারা আধিপত্যে বিশ^াসী। গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ধোঁয়া তুলে নিজস্ব স্বার্থ বাস্তবায়নই আমেরিকার একমাত্র নীতি।

প্রশ্ন: আপনি আরো কিছু বলতে বা যোগ করতে চান? অথবা,আপনি কি অন্য কোন বিষয়ে জানাতে চান যা আপনি বিশ্বাস করেন বাংলাদেশিদের জানা উচিত?

রাষ্ট্রদূত: ফিলিস্তিনের মানুষ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ জানে সময় হলে ঠিক কি করতে হবে। আমি এটাও নিশ্চিত যে, মুসলিম বিশ্ব কোন উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশই তার নেতৃত্ব দেবে। ফিলিস্তিনের জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত থাকবে এবং সেভাবেই কাজ করবে এটাই প্রত্যাশা করি। কিন্তু বাংলাদেশ একা অনেক কিছু করতে না পারলেও সবাইকে নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করবে। মুসলিম বিশ্বকে এক বিশ্বের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সময় দেয়ার জন্য এবং গাজার চিত্র তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2019 Breaking News
Theme Customized By BreakingNews